রিমির
নিজ কেন্দ্র দরদরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেওয়ার সময় তার পাশেই
দাঁড়িয়ে ছিলেন কাশফিয়া নির্যাতন মামলার প্রধান অভিযুক্ত কাজল মোল্লা(গোল
চিহ্নিত)।
ঢাকা: বাসদ-সিপিবি-বামমোর্চার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কারণে ১৮ ডিসেম্বরের বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পিছিয়ে ২৬ তারিখে নেওয়া হয়েছে। আর ঝুঁকিমুক্ত ভেবে সিলেট ও রাজশাহীতে ১৯ ডিসেম্বর ডাকা জামায়াতের হরতাল এবং ২০ ডিসেম্বর ইসলামী ও সমমনা ১২ দলের দেশব্যাপী হরতালে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)।
বামদলগুলোর হরতাল সফল করতেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন পরিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবারের হরতালকে আরো বেশি সফল করতে সরকারি গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেলা একটা পর্যন্ত পাবলিক পরিবহনের কোন বিআরটিসি বাস চলতে দেখা যায়নি। সব কাউন্টারই ছিলো বন্ধ। এদিকে নীলক্ষেত মোড় ও আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডে সকাল ১১টায় দেখা যায়, যাত্রীদের বাসে উঠতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ।
ফলে পিকেটিং না হলেও পুলিশি সহায়তার এ হরতালে নাগরিক দুর্ভোগ হচ্ছে কয়েক মাত্রা বেশি।
১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতালের আবহ দেখে মনে হয়, সরকারই হরতাল পালন করছে। সরকারের পুলিশ বাহিনী বাধা দিচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে। রাস্তার মোড়ে গাড়ি আটকে দেওয়া ছাড়াও যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
শাহবাগের পরীবাগ মোড়ে সকাল ৯টার দিকে বারডেম ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে আসা রোগীদের রিকশা ও গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে হারতালকারীদের সহযোগিতা করেছে হাস্যোজ্বল পুলিশ।
শাহবাগ মোড়ে আসার জন্যে কাঁটাবন মোড়, পরীবাগ মোড়, মৎস্যভবন মোড় ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশ হরতাল পালন করছে সুচারুভাবে। আর বামদলের ছাত্রসংগঠনগুলো নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে শাহবাগ মোড়ে। সেখানে ঢাক-তবলা-গিটার নিয়ে গণসংগীতে সুর তুলছেন তারা। শাহবাগ মোড়ে অর্ধশতাধিক সংখ্যক হরতালকারী রয়েছেন, তার চেয়ে মোড়ে আসার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের সংখ্যা ৫ শতাধিক।
ফাঁক গলে শাহবাগ মোড়ে কোন গাড়ি প্রবেশ করলেই সেটিকে বাধা দিয়ে যাত্রীদের হয়রানি করছেন বামছাত্রসংগঠনের কর্মীরা। কিন্তু পুলিশ এ যাত্রী হয়রানিকে কোন সমস্যা মনে করছেন না, বরং সহযোগিতা করছে।
পল্টন মোড়ে হরতালের কর্মসূচি পালন করছে সিপিবি, গণতান্ত্রিক বামমোর্চা ও বাসদ। পল্টনের মোড়েই শতাধিক কর্মী দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে হরতালের পক্ষে সমাবেশ করছে। কিন্তু পল্টন মোড়ের আশপাশে আর কোন কর্মীর কার্যক্রম চোখে পড়েনি। বরং পল্টন মোড়ে আসার জন্য হাইকোর্ট মোড়, বিজয়নগর মোড়, বায়তুল মোকাররম, জিরো পয়েন্টসহ চারপাশে কঠোরভাবে হরতাল পালন করছে পুলিশ।
পল্টন মোড় দিয়ে যেন কোন যানবাহন যেতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর ভূমিকায় নিযুক্ত পুলিশ।
বিজয়নগর মোড় থেকে বারডেম হাসপাতালে যাচ্ছিলেন রোগী শফিকুর রহমান।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, কোথাও পিকেটার দেখলাম না, পুলিশই গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোন দেশে বাস করছি আমরা? দেশটা কাদের? পুলিশ হরতাল পালনে সহযোগিতা করে!
হরতালে পুলিশ সমর্থন করছে বলে স্বীকার করেছেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আজকের হরতালের পুলিশও আমাদের সহযোগিতা করছে। কারণ আমরা যে দাবিগুলো নিয়ে হরতাল পালন করছি, সেসবের বিষয়ে পুলিশকে আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। সে কারণেই পুলিশও আমাদের সাহায্য করছে।”
তিনি আরো বলেন, “আজকের হরতালে সব পোষাক শ্রমিক, নিম্নবিত্ত, মেহনতি মানুষ সর্বাত্মকভাবে হরতাল পালন করছে। পুলিশ সাহায্য করছে, ঢাকাতে এখনো একজনও গ্রেপ্তার হয়নি।”
সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন করছে বলেই আমরা এদের সাহায্য করছি। জামায়াত-বিএনপি যদি ভাঙচুর-অগ্নিকাণ্ড না করে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল করে তাহলেও আমরা সাহায্য করবো। তবে আমরা সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত রয়েছি। কোন সহিংসতা হলে প্রতিরোধ করা হবে।
বাংলাদেশ সময় ১২৫৪; ডিসেম্বর ১৮, ২০১২
এমএন/এমআইএস
সরকারপক্ষ বলছে তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত না
৯ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের অবরোধবিরোধী মিছিলে বিশ্বজিতের অন্যতম হত্যাকারী মাহফুজুর রহমান নাহিদ(১), নেতৃত্বে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম (২) ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম (৩)।
সরকারপক্ষ বলছে তারা ছাত্রলীগের
সঙ্গে জড়িত না
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোটের ডাকে গত ৯ ডিসেম্বর অবরোধ কর্মসূচি
চলাকালে পুরান ঢাকায় ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে নিরীহ পথচারী বিশ্বজিৎ দাস
যাদের নির্মম হামলায় প্রাণ হারান, তারা ছাত্রলীগের নয়, শিবিরের কর্মী বলে
দাবি করা হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে। বিশ্বজিতের ওপর হামলাকারী
পাঁচজনের যে পরিচয় সরকার পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়েছে, তা হলো :
মাহফুজুর রহমান নাহিদ : ছাত্রলীগের ব্যানারে শিবিরের সক্রিয় কর্মী মাহফুজুর
রহমান নাহিদ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের
ছাত্র নাহিদের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডে।
নাহিদ হাতিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে
ভর্তি হয়। হাতিয়ায় থাকাকালে সে স্থানীয় শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিল। তার বাবা
মাওলানা মহিউদ্দিন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি
আজহারুল আলম সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে নাহিদের বড় ভাই তাফসীর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্র। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল শাখা শিবিরের সভাপতি।
তাফসীরের আরো পরিচয় হলো, ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে
ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সে। সেই থেকে তাফসীর পলাতক।
নূরে আলম লিমন : ছাত্রলীগের কোনো পদে নূরে আলম লিমনের নাম নেই। তবে
ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে সে ক্যাম্পাসের আশপাশে চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ
নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে। লিমন মূলত একজন সন্ত্রাসী। জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম ব্যাচের এই ছাত্র ২০০৯ সালে
পরীক্ষার হলে চাপাতিসহ শিক্ষকদের হাতে ধরা পড়েছিল।
শাকিল আহমেদ : ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে শাকিল আহমেদকে, কোনো পদেই
নেই। শাকিল মূলত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশ এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী।
শাকিলের বড় ভাই পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা।
ইমদাদুল হক : ছাত্রলীগের কোনো পদধারী নয় ইমদাদুল হক। জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের এই ছাত্র ক্যাম্পাসে
এক ছাত্রীর মোবাইল ফোনসেট ছিনতাইসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত।
আবদুল কাদের তাহসিন : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের একটি আবাসিক হলের
সভাপতির ছোট ভাই আবদুল কাদের তাহসিন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান
বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের এই ছাত্র মূলত জামায়াত-শিবির ঘরানার।
টুঙ্গীপাড়ায় বাড়ির সামনের ব্রিজই শেষ করতে পারেননি শেখ হাসিনা!৪০০০ কোটি টাকার জালিয়াতি বড় কোনো ঘটনা নয়: অর্থমন্ত্রী |

No comments:
Post a Comment